• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯

স্বাস্থ্য

কুষ্টিয়ায় বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী,নেই সচেতনতা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১২ জুলাই ২০২৩

আকরামুজ্জামান আরিফ, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: 
কুষ্টিয়ায় বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯ জন রোগী। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ১৫ রোগী। চিকিৎসকরা বলছেন ঈদের পর থেকে এ জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে কুষ্টিয়া ২৫০শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, নির্ধারিত ৯টি শয্যায় রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। সোমবার ৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে ফিরে যাওয়ায় বর্তমানে ৬ জন রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, গেল সাতদিনে এই হাসপাতালে নয়জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের ভেতর দুইজন রোগী সুস্থ হয়ে ফিরেও গেছেন। আমাদের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে নির্ধারিত ৯টি শয্যা থাকলেও মোট ২০টি শয্যার ব্যবস্থা রয়েছে। ডেঙ্গুতে আতঙ্কিত না হয়ে তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেন।
এদিকে হঠাৎ কুষ্টিয়ায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের ভিতরে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তারপরও কুষ্টিয়াবাসীর মধ্যে ডেঙ্গু নিয়ে দৃশ্যমান সচেতনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ফলে প্রতিদিন আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া এই রোগের বাহক এডিস মশা নিধন ও প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জনসচেতনতায় কোন দৃশ্যমান কার্যক্রম চোখে পড়েনি।
কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা হাফিজ-আল আসাদ বলেন, সম্প্রতি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবারের আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। বাড়িতে বাচ্চা ও বৃদ্ধ মা রয়েছে। সবসময় তো মশারি টাঙিয়ে থাকা যায় না। যেহেতু এডিস মশাই এর একমাত্র বাহক সেহেতু এই মশার আবাস ও প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করতে পারলেই কেবলমাত্র আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। কিন্তু এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষের তেমন কোন তৎপরতা নেই। আগে যাও বাড়ির আশে পাশের ড্রেনগুলোতে মশা নিধন স্প্রে করা হতো। এখন তার চোখে পড়ে না।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে একসাথে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে জানিয়ে স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে কাজ করা পরিতোষ কুমার দাস বলেন, শহরকে পরিচ্ছন্ন ও মশামুক্ত করতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের শহর আমাদেরকে পরিষ্কার রাখতে হবে। সচেতনতা সৃষ্টিতে পৌরসভার যেমন দায়িত্ব আছে ঠিক তেমনি নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়ও কম নেই। যথাযথ কর্তৃপক্ষের দিকে না তাকিয়ে পাড়া-মহল্লায় তরুণেরা দল বেঁধে নিজেরাই নেমে পড়তে হবে আমাদের নিজ নিজ এলাকা পরিষ্কার করতে।
এদিকে কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়রের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে,এডিস মশা নির্মূলে পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যাদের কাজ হবে প্রতিদিন মশা নিধন স্প্রে করা। সেই সাথে দ্রুত ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশা নিধন বিষ প্রয়োগ করার কার্যক্রম শুরু হবে।
পৌর ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কৌশিক আহমেদ বলেন, এডিস মশা নিধন ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে পৌরসভার কাউন্সিলরসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ মাঠে সক্রিয় রয়েছে। এ সংক্রান্ত জনসচেতনতা কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন,ঈদের পর থেকেই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলছে জেলায়। জেনারেল হাসপাতালসহ সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডেঙ্গু শনাক্ত এবং চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রয়েছে। তাই ডেঙ্গু জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তিনি আরও বলেন,ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার ও মশার বংশবিস্তাররোধ করা প্রয়োজন। পরিত্যক্ত পাত্র, ফুলের টব বা ডাবের খোসায় জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে। এ কারণে অযথা কোনো পাত্রে পানি জমতে দেওয়া যাবে না। একই সঙ্গে বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads